চরক (Charak)

ভারতীয় সভ্যতার চিকিৎসকেরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ভেষজ লতা-পাতাকে তাদের ওষুধি গুণ অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করেন। খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৮০০ সালে চরক তাঁর লিখিত 'চরক সংহিতা' বইতে এরকম ৫০টি শ্রেণি তৈরি করেন যার প্রতিটিতে ছিল ১০টি করে ওষুধ। 

তাঁর মতে এই ৫০০ ধরনের ওষুধ ছিল একজন চিকিৎসকের মূল হাতিয়ার। চরক ছিলেন কাশীর মহারাজার রাজবৈদ্য। তিনি তাঁর ওষুধগুলোকে 'আসব', 'অরিস্ট', 'বটিকা', চূর্ণ', 'তৈল' ইত্যাদি উপস্থাপনায় বা ডোজেস ফর্মে তৈরি করতেন। তাঁর চিন্তাধারা ও চিকিৎসা পদ্ধতির হাত ধরেই আজকের আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্রের প্রতিষ্ঠা। তাঁর 'চরক সংহিতা' বইটিই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের প্রথম বই। তিনি শারীরবিদ্যা, রোগতত্ত্ব এবং ভ্রূণবিদ্যার সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি ওষুধের উৎসগুলোকে উদ্ভিজ, প্রাণীজ ও খনিজ -- এই তিনভাগে বিভক্ত করেন। তাঁর বই থেকে আমরা আজ থেকে প্রায় ২,৮০০ বছর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে কী ধরনের অসুখ হতো, সেগুলোর চিকিৎসায় কী ওষুধ ব্যবহার হতো, কীভাবে সেগুলো তৈরি হতো, কোন মাত্রায় ব্যবহার হতো, এমনকি রোগীর পথ্য কী হবে এসব বিষয়ে জানতে পারি। ইউরোপের বিজ্ঞানীরা তাকে 'ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক' বলে অভিহিত করেন।

Comments

Popular posts from this blog

ইবনে সিনা (Ibn Sina)

দ্যা বেঙ্গল ড্রাগ রুলস (The Bengal Drugs Rules)

ওষুধ আইন (The Drugs Act)